এম এ কাইয়ুম চৌধুরী,মানিকগঞ্জ সংবাদদাতাঃ "এক ঘাটেতে রান্ধিবারি মোরা আরেক ঘাটে খাই,মোদের সুখের সীমা নাই।" এই আবহমান বাংলায় যুগ যুগ ধরে সুখের সন্ধানে বেদে সম্প্রদায়ের লোকেরা সুদুর অতীত অদ্যবধি থেকে ঘাট থেকে ঘাটে ছুটে চলে। যাযাবর বেদে সম্প্রদায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ জীবন-যাপন করে। স্থায়ী নিবাস না থাকা আর দারিদ্র্যের কারণে বেদে সম্প্রদায়কে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। বেদে পরিবারের লোকেরা নিজেদের প্রয়োজনের তাগিদে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়ায় প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী। স্বামীরা ঘরে বসে সংসার ও সন্তানদের দেখাশুনা করে আর স্ত্রীরা গাঁয়ে গাঁয়ে ঘুরে সাপখেলা দেখায়,তৈজসপতৈজসপত্র, চুড়িমালা,ইত্যাদি বিক্রি করে টাকা উপার্জন করে।এরা যুগ যুগ ধরে অবহেলিত সমাজ বিচ্ছিন্ন পরিবার হিসেবে জীবনযাপন করে।আসলেও প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এদের স্থায়ী নিবাস গড়ে উঠেনি। যুগের পরিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় দেশ ও জাতির অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও যাযাবর বেদেরা অবহেলিতই রয়ে গেছে। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি মোটেও। বেদে সম্প্রদায়ের ২টি ধারা রয়েছে। এর একটি ধারার বেদেরা ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে বিভিন্ন নদীর ঘাটে বসবাস করে। অপর দিকে অন্য ধারার বেদেরা তাঁবু টাঙ্গিয়ে বিভিন্ন স্থলে বসবাস করে। স্থল ও জল পথে বসবাস করলেও এদের জীবনযাপন এক ও অভিন্ন।বেদেদের পূর্বপুরুষ আর বাপদাদার পোশাকে প্রধাণ্য দিতে গিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতে পারে না।তাদের জীবনযাপন দেখলে মনে হয়, এই আধুনিক যুগেও তারা কতোটা সহজ সরল ও অবহেলিত। সমাজের মানুষ সব সময় তাদের অবহেলা আর অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে। এদের বেদেরা স্ত্রী সন্তান নিয়ে নদীর ঘাটে ঘাটে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকার ভিতরে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও ব্যবসার মালামালসহ বসবাস করে। সেখানেই রান্না বান্না ও খাওয়া দাওয়া করে।অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাওয়া দাওয়া আর মলমূত্র ত্যাগের কারণে তাদের নানা রোগ বালাই লেগেই থাকে। সুচিকিৎসার জন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বেদে শিশুদের স্বাস্থ্যহানি ঘটে। এ ব্যাপারে উর্ধতন মহলের সুদৃষ্টি একান্ত কাম্য হয়ে পড়েছে।
সুখের সন্ধানে ঘাট থেকে ঘাটে ভেড়ে বেদের নৌকা
Reviewed by স্বাধীন খবর
on
6:25 AM
Rating:
Reviewed by স্বাধীন খবর
on
6:25 AM
Rating:

No comments: